সাহেব রেজা (শ্যামনগর)সাতক্ষীরাঃ
গ্রামীণ জনপদে দরিদ্র শ্রেণীর মানুষের কুঁড়ে ঘর ছিল মাথা গোঁজার একমাত্র ঠিকানা। ৯০ দশকেও গ্রামাঞ্চলে অসংখ্য কুঁড়ে ঘর ছিল। বিশেষ করে প্রতিটি বনজীবী পরিবার কুঁড়ে ঘরে বসবাস করতেন।
কুঁড়ে ঘর নিয়ে নানান রকম ছড়া ও গল্প লিখেছেন বিখ্যাত লেখকরা। কিন্তু সাম্প্রতিককালে কুঁড়ে ঘর তেমন চোখে পড়ে না। উপকুলের গ্রামুলো ঘুরেও দেখা মেলে না একটি কুঁড়ে ঘর।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গ্রামের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন সাধিত হওয়ায় এবং বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার মানবতার উজ্জল দৃষ্টান্ত ভুমিহীন দের গৃহ দান এবং দীর্ঘস্থায়ী আবাসন গড়ার কারণে এখন আর তেমন দেখা মেলে না কুঁড়ে ঘর। ক্রমেই মানুষের রুচি পরিবর্তন হওয়ায় এবং মাথাপিছু আয় বেড়ে যাওয়ায় নিম্নবিত্ত পরিবার এখন আর খড় কুটো দিয়ে ঘর নির্মাণ করেন না। আবার ওই কুঁড়ে ঘর তৈরির কারিগর এখন তেমন পাওয়া যায় না। বর্তমানে গ্রামের অনেকেই টিন দিয়ে ঘর তৈরি করেন। আবার কেউ সেমিপাকা বাড়ি নির্মাণ করছেন।
উপকুলীয় এলাকার বাসিন্দা জিয়াউর রহমান বলেন , কুঁড়ের ঘর প্রতি বছর মেরামত করতে হয়। আর টিনের তৈরি ঘর ২০-২৫ বছরেও মেরামতের প্রয়োজন হয় না। এ কারণে অনেকে টিন দিয়ে ঘর তৈরি করছে।
উপকুলবর্তী ইউনিয়ন বুড়িগোয়ালিনীর বনজীবী আব্দুল হাকিম বলেন, আমি এক সময় কুঁড়ের ঘরে বসবাস করতাম। কিন্তু এখন আমার আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। তাই আমি টিনশেড ঘর তৈরি করেছি। আমার ইউনিয়নে প্রায় আড়াই হাজার পরিবার রয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই গরীব। বর্তমানে এখানে কুঁড়ের ঘর নেই বলা যায়। যারা গরীব তারাও টিন দিয়ে তৈরি ঘরে বসবাস করেন।
শ্যামনগর উপজেলার উপকুলীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল হালিম বলেন , আমি ৩০ বছর ধরে এখানে বসবাস করছি। আমার গ্রামের প্রতিটি ঘর ছিল খড়কুটো দিয়ে তৈরি। কিন্তু বর্তমানে এখানকার প্রতিটি ঘর টিনের তৈরি। মানুষের আয় বেড়েছে এবং রুচির পরিবর্তন হয়েছে। তাই এখন আর কেউ কুঁড়ে ঘর তৈরি করেন না। তাছাড়া উপজেলার মধ্যেই যারা একেবারে দারিদ্র্য অসহায় তাদের কে বিশেষ করে সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নানান ভাবে সহযোগিতার মাধ্যমে, এই কুড়িঘর হতে উপকুলীয় এলাকার মানুষের মুক্তি হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আক্তার হোসেন বলেন, মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে। আমরা একটা দুর্যোগকবলিত উপজেলায় বসবাস করছি, এজন্য দুর্যোগ হতে দুরে থাকতে হলে আমাদের অব্যশই কুড়িঘর থেকে ভাল ঘর নির্মান করা উচিত, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মুজিব বর্ষে দারিদ্র্য অসহায়, ভুমিহীন দের জন্য গৃহ নির্মান করে দিয়েছে, যার ফলে ঝুঁকিপূর্ণ “কুড়িঘর ” হতে এই উপকুলীয় এলাকার মুক্তি মিলেছে
আগের চেয়ে মাথাপিছু আয় বেড়েছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়েছে। তাই এখন গ্রামাঞ্চলে কুঁড়ের ঘর দেখা না।