দেবহাটা প্রতিনিধি: দেবহাটার ভাতশালা সম্মিলনী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (২ অক্টোবর) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পত্রের নির্দেশ মোতাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার এ তদন্ত পরিচালনা করেন। সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহজাহান কবীরের নেতৃত্বে এ তদন্ত সম্পন্ন হয়। এসময় জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক মেহেদী হাসান, দেবহাটা উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মিজানুর রহমান সহ জেলা শিক্ষা অফিসের বিভিন্ন পর্যয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তদন্তকালে নিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্র পর্যবেক্ষণ এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে আলাদা আলাদা বসে তদন্ত সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন তিনি।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের অবিভাবক সদস্য আনিছুর রহমান ভাতশালা সম্মিলনী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক শিরিনা পারভীন সহ শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে এমন অভিযোগ দায়ের করেন। নিয়োগে অবৈধতা ও নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ করেন। এছাড়া নিয়োগ বন্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করলে ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ও ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে সরেজমিনে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে প্রতিবেদেন দাখিল করা হয়। তারই প্রেক্ষিতে ৬ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে ০৫. ৪৪. ৮৭০০. ০২৩. ০১. ০০২. ১৯. ৩৮৯. ৭৮০ যুক্ত স্মারক পত্রে বিধি মোতাবেক বিদ্যমান শূন্যপদ/সৃষ্টপদে জনবল নিয়োগ করতে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন জেলা প্রশাসক। সেই মোতাবেক নিয়োগ বোর্ডে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এর প্রতিনিধি হিসাবে সাতক্ষীরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) সমরেশ কুমার দাশ, তালার শহীদ আলী আহম্মদ সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) অলোক কুমার তরফদারকে নিয়োগ করা হয়। গত ১৭ ডিসেম্বর ২১ সালের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রধান শিক্ষক পদে ৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহন করেন। এতে শিরিনা পারভীন প্রথম স্থান অর্জন করেন। কর্তৃপক্ষের উপস্থিতে নিয়োগ পরীক্ষাটি সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন হলেও সেটি বিতর্ক করতে বিদ্যালয়ের অবিভাবক সদস্য ও ভাতশালা গ্রামের আনিছুর রহমান বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানা যায়। তবে বর্তমান নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিরিনা পারভীনের জনস্থান গোপালগঞ্জ হওয়ায় চাকুরীর শুরুতে নিজ জেলার রোকেয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৯৯৮ সালের ২৫ নভেম্বর সহকারী শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। সেখান থেকে গত ২০০৩ সালের ১২ মার্চ বদলি নিয়ে খুলনার সোনালী জুট মিল হাইস্কুলে ২০০৩ সালের ১৩ মার্চ যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারী বদলি নিয়ে ওই সালের ১ মার্চ ভাতশালা সম্মিলনী উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন। পরবর্তীতে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি প্রধান শিক্ষক পদে উপনিত হন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম ব্যাহত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা।
এদিকে, তদন্তকালে জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহজাহান কবীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক অভিযোগের বিষয় সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো খুব গুরুত্বের সাথে দেখা হয়েছে। সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় আমাদের তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হবে। তবে বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কর্মকান্ড যাতে ব্যাহত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে।