মেহেরপুরের মুজিবনগর কমপ্লেক্সে পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি বাগানে সফলতা পেয়েছে আরবীয় খেজুর চাষ।
বাগান ঘুরে দেখা যায় এ বছর প্রায় ১৫ টি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে খেজুর। চলছে সাকারের মাধ্যমে চারা তৈরির প্রক্রিয়া। মধ্যপ্রাচ্যে যে মান ও স্বাদের ফল হয় সেই মানের ফলই গাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে। খেজুর চাষে সফলতা বলে কৃষি বিজ্ঞানীরা মত প্রকাশ করেন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখন প্রয়োজন এ অঞ্চলে একটি খেজুর রিসার্চ সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা। তাহলেই সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব মধ্যপ্রাচ্যের ফল খেজুর চাষ। আর্টিফিশিয়াল পরাগায়নের মাধ্যমে বাড়ানো হয় গাছের ফল ধারণক্ষমতা। পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে নেট দিয়ে আর বৃষ্টির পানি যাতে ফলে না পড়ে সেজন্য পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে পুরো থোকা। যা দেখে অনেকেই অনুপ্রাণিত হচ্ছেন খেজুর বাগান করতে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যের আবহাওয়ার সঙ্গে এখনকার আবহাওয়ার মিল না থাকায় এ পর্যায়ে আসতে অনেক প্রতিকূল পরিবেশ পাড়ি দিতে হয়েছে তাদের। তবে ১৫ টি গাছে পরিপূর্ণ ফল আসায় খুশি তারা। এখন পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে ফলের মিষ্টতা ধরে রাখার।
আমদানিনির্ভর মধ্যপ্রাচ্যের ফল খির খেজুর। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে দেশেই এ ফল উৎপাদনের দ্বার খুলতে যাচ্ছে। ১০টি জাত নিয়ে মেহেরপুরের মুজিবনগরে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে চাষ। কয়েকটি জাত বাছাই করে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে বলে জানালেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। চিকিৎসকরা বলছেন, খেজুরটি দেশে উৎপাদন করা সম্ভব হলে সহজে পূরণ হবে পুষ্টির চাহিদা। কমবে খেজুর আমদানি। এখন মেহেরপুরের মুজিবনগরে সৌদি আরবের খেজুরের চাষ হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে কিছুটা মিল রয়েছে মেহেরপুর অঞ্চলের। তারপরও বেলে ও দো-আঁশ মাটিতে ভালো জন্মে খেজুর গাছ।
‘মুজিবনগর সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পেরথ আওতায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কুষ্টিয়া কেন্দ্র মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ কমপ্লেক্স চত্বরে ২০১৪ থেকে খেজুরের চাষ শুরু করে। কাতার, ওমান, দুবাই, ইরান, সৌদি, সুদান থেকে আজোয়া, আম্বার, লুলু, খালাস, ডেগলেটনুর, কালমি, মাকতুম, সুক্কারি, বাহারি ও মরিয়ামসহ ১০টি জাতের বীজ নিয়ে আসেন মধ্যপ্রাচ্য থেকে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কুষ্টিয়া। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বীজ বপন করা হয় কুষ্টিয়া সেচ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। সেই বীজের ২ হাজার চারা রোপণ করা হয় মুজিবনগর কমপ্লেক্সে। বপনের আড়াই বছরের মধ্যে ৪টি গাছে ফলও আসে।