এস এম সাহেব আলী সাতক্ষীরাঃ
আজ ১৫ আগস্ট, জাতীয় শোক দিবস। স্বাধীনতার স্থপতি, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী।
জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি জাতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে পালন করছে দিনটি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপদগামী সদস্য ধানমন্ডির বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল।
এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ ও মেয়ে বেবি, সুকান্তবাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর দু’কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে রক্ষা পান।
জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি অনুযায়ী আজ ১৫ আগস্ট সোমবার সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে।
সাতক্ষীরা রেঞ্জ পশ্চিম বনবিভাগের আয়োজনে রেঞ্জ কার্যালয়ে সকাল ১১টায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা নুর আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা রেঞ্জ এর সহকারী বন সংরক্ষক এম কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী।
এ সময়ে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বুড়িগোয়ালিনী সহকারী স্টেশন কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম কদমতলা স্টেশন কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন, কৈখালী স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ হারুন অর রশীদ, প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সহকারী বন সংরক্ষক এম কে এম ইকবাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, আজ ১৫ ই আগষ্ট ,
আজ সেই দিন যেদিন বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা এবং সেইসাথে তার পরিবারের সকল সদস্যদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছেন। বাঙালি জাতির কাছে এই দিনটি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পরিচিত কারণ এই দিনে বাংলার ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্যতম ঘটনা ঘটেছিল।
আপনারা সকলেই জানেন যে শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ বাঙালির নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন হয় এবং সেইসাথে বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করার জন্য তিনি তাঁর জীবনকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে বাঙালিদেরকে যেভাবে বাংলাদেশ স্বাধীন করার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিলেন এবং অবশেষে স্বাধীনতা অর্জন করতে পেরেছেন কিন্তু এই বীরের সঠিক সম্মান না দিয়ে উল্টো তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
বাংলার ইতিহাসের এই ঘটনার প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়ে আমরা আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং সেইসাথে আমরা যারা দেশব্যাপী তার মৃত্যুর জন্য শোক প্রকাশ করছি। তার স্বপ্ন কে সামনে রেখে আমাদের উচিত বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলা।
উক্ত অনুষ্ঠান শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার সহপরিবারের জন্য দোয়া মুনাজাত করা হয়।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কলাগাছিয়া ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্রর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মনিরুল ইসলাম।